নিউজ ডেস্ক।।
নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত সিএনজিতে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও লুটপাটের ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে চৌমুহনী পৌরসভার নাজিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—নাজিরপুর এলাকার রাজুর ছেলে রবিন (২০) ও আলাইয়াপুর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলামের ছেলে আরাফাত হোসেন অন্তর (২৩)। তবে এ ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছে, যাদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনার বিবরণ
র্যাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২ মার্চ নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইফতার মাহফিল শেষে সিএনজিতে বাসায় ফিরছিলেন এক ছাত্রী। এ সময় গাড়িতে থাকা কয়েকজন পুরুষ তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ছাত্রীর চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে দেয় এবং তার ব্যাগ থেকে টাকা, একটি এটিএম কার্ড ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এরপর তারা ওই ছাত্রীকে একলাশপুর বাজারের উত্তর পাশের একটি নির্জন স্থানে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। অসহায় অবস্থায় ছাত্রীটি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে, তবে ততক্ষণে দুর্বৃত্তরা সিএনজি নিয়ে সরে পড়ে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গ্রেফতার
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর ভুক্তভোগী ছাত্রী বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করে।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘এই ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক।’’
নারী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
এই ঘটনার পর নোয়াখালীর শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন, কীভাবে চলন্ত সিএনজির ভেতরে একজন ছাত্রীকে এভাবে হেনস্তা করা হলো? এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নারীদের জন্য নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পরিবহন খাতে নজরদারি বাড়াতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।