নিউজ ডেস্ক।।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), জেল আপিল ও নিয়মিত আপিলের ওপর রায় ঘোষণা হতে পারে আগামীকাল রোববার (১৭ মার্চ)।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় মামলাটি রায়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘রাষ্ট্র বনাম মেহেদী হাসান রাসেল এবং অন্যান্য’ শিরোনামে ডেথ রেফারেন্স মামলাটি রায়ের জন্য তালিকাভুক্ত রয়েছে।
মামলার পটভূমি
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার বাবা চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলায় রায় ঘোষণা করে, যেখানে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স
আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন, যা ‘ডেথ রেফারেন্স’ নামে পরিচিত। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিত ব্যক্তিরাও আপিল করার সুযোগ পান।
২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের জন্য মামলার নথি হাইকোর্টে আসে এবং এটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন, যা একইসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়।
২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট জেল আপিল গ্রহণের শুনানি করে এবং ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।
রায় ঘোষণার অপেক্ষা
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ করে হাইকোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে। অবশেষে আগামীকাল রোববার এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হতে পারে।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ একাধিক আইনজীবী এবং আসামিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহানসহ অন্যান্য আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন।
প্রত্যাশা ও প্রতিক্রিয়া
এই রায় আবরার ফাহাদের পরিবার, দেশের শিক্ষার্থী সমাজ ও সাধারণ জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই মামলার রায় ভবিষ্যতে নৃশংস অপরাধ দমনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা
- কালের কন্ঠস্বর