অনলাইন ডেস্ক।।
ময়মনসিংহ: প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসেন লাখ লাখ পুণ্যার্থী। একে বলা হয় ‘বুধাষ্টমী’, যা প্রতি বারো বছর পরপর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এবারও ময়মনসিংহের কাচারী ঘাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের জীবনের পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে এ স্নানে অংশগ্রহণ করেন।
এবারের স্নান উপলক্ষে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থান কাচারী ঘাটে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ময়মনসিংহের পুলিশ, ফায়ার ডিফেন্সের উদ্ধার কর্মী ও ডুবুরিরা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সেচ্ছাসেবকরা সেবা প্রদান করে আসন্ন স্নানকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
এ স্নানের পেছনে রয়েছে ত্রেতাযুগের একটি ধর্মীয় কাহিনী, যেখানে পরশুরাম তার পিতার আদেশে মাতৃহত্যা করেন এবং পরবর্তীতে সেই পাপ থেকে মুক্তির জন্য পবিত্র জল ধারণ করেন ব্রহ্মপুত্র নদে। পরশুরামের পাপ মোচনের কাহিনী আজও মানুষের মধ্যে গভীর আধ্যাত্মিক প্রভাব ফেলেছে এবং সারা ভারতবর্ষে বিশেষভাবে পুণ্যস্নান হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে।
তথ্য অনুসারে, স্নান শেষে পুণ্যার্থীরা ধর্মীয় মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে নিজেদের পাপ মোচনের জন্য ব্রহ্মপুত্রের পবিত্র জলে স্নান করেন। স্নানের মন্ত্রটি ছিল:
‘ওঁ ব্রহ্মপুত্র মহাভাগ শান্তোনঃ কুল নন্দন...’
এ বছরও এই ঐতিহ্যবাহী স্নান আশাপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের পুণ্যার্থীদের মধ্যে এক ধর্মীয় উদযাপন হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে শাস্ত্রীয় রীতি ও পূর্ণবিশ্বাসের সাথে সবার অংশগ্রহণ ছিল।
ময়মনসিংহের কাচারী ঘাটে এই আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানটি শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি অঞ্চলের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বকেও ফুটিয়ে তোলে।