অনলাইন ডেস্ক।।
ঢাকা, ১৩ এপ্রিল ২০২৫:
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে ময়মনসিংহসহ মোট ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিডা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গভর্নিং বডির ১১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, “এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান কারণ হলো, নির্ধারিত সময়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদেও পরিকল্পনা বিবেচনায় এসব অঞ্চল বর্তমানে অপ্রয়োজনীয় বলে প্রমাণিত হওয়া।”
বাতিল হওয়া সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ:
১. সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক (কক্সবাজার)
২. সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক (বাগেরহাট)
৩. গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল (মুন্সীগঞ্জ)
৪. শ্রীপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (গাজীপুর)
5. ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ময়মনসিংহ)
বাতিল হওয়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ:
১. বিজিএমইএ গার্মেন্টস শিল্প পার্ক (মুন্সীগঞ্জ)
২. ছাতক ইকোনমিক জোন (সুনামগঞ্জ)
৩. ফমকম ইকোনমিক জোন (বাগেরহাট)
৪. সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন (ঢাকা)
৫. সোনারগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল (নারায়ণগঞ্জ)
বিডার সূত্র অনুযায়ী, কিছু অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে শুধুই কাগজে-কলমে পরিকল্পনায় ছিল; বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। সরকারের দৃষ্টিতে এগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কম এবং অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ বেশি। ফলে ভবিষ্যতের জন্য বাস্তবসম্মত ও ফলপ্রসূ অঞ্চলগুলোর উপর জোর দেওয়া হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি:
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণের আগে জ্বালানি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করে যৌক্তিক ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও জানান, একসময় যেসব অঞ্চলকে সম্ভাবনাময় মনে করা হয়েছিল, বাস্তবে সেগুলোর অনেকগুলোতেই শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার বাস্তব অবস্থা অনুকূল নয়। ফলে অঞ্চল নির্ধারণে সরকার এখন আরও সতর্ক ও তথ্যভিত্তিক অবস্থান নিচ্ছে।
এই পদক্ষেপ অর্থনৈতিক কাঠামোর নতুন করে গঠন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের দূরদর্শী উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।