অনলাইন ডেস্ক।।
কালের কন্ঠস্বর || জামালপুর:
জামালপুরে ৩২ বছর আগে ঘটে যাওয়া এক হত্যাকাণ্ডের মামলায় একজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং চারজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুবকর ছিদ্দিক এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান (ঢুরিয়াভিটা, সরিষাবাড়ী) বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
ঘটনার পেছনের গল্প
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ২৩ মে সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের হাফিজুর রহমান তার বাল্যবন্ধু মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। এরপর থেকে মোজাফফর নিখোঁজ ছিলেন।
পরদিন জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের কাঁচা রাস্তার পাশে একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় না মেলায় পুলিশ সেদিনই মরদেহটি দাফন করে। তবে কয়েকদিন পর নিহত মোজাফফরের ভাই শাহজাহান থানায় গিয়ে মরদেহের ছবি ও জব্দকৃত মালামালের ভিত্তিতে তা শনাক্ত করেন।
ঘটনার চারদিন পর, ২৫ মে পুলিশ বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত শেষে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে রায়
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় মোট ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাফিজুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
বাকি চার আসামি—মোস্তাফিজুর রহমান, শওকত আলী, গোলাম রব্বানী ও ওমর আলী—বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।
এ রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ৩২ বছরের এক হত্যাকাণ্ডের বিচারিক অধ্যায় শেষ হলো, যদিও এখনো প্রধান আসামি পলাতক রয়েছেন।