নিউজ ডেস্ক।।
কালের কন্ঠস্বর || এপ্রিল ২০২৫: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি মনে করছে, দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, দীর্ঘ রক্তঝরা আন্দোলনের পর যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তারা এখনো গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী করতে কার্যকর কোনো প্রস্তুতি নেয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, “পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা আদালতে দাঁড়িয়ে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়া ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করছে। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হুমকি-ধমকির মাধ্যমে তারা বিচার ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করছে, যা একটি গভীর চক্রান্তের অংশ।” বিএনপি বলছে, ভারতে পলাতক শেখ হাসিনা এবং তার ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী অন্তর্বর্তী সরকারকে অকার্যকর করে তুলতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। তারা আদালত অবমাননা করছে, পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করছে এবং শাসনতন্ত্রকে অস্বীকার করে পুনরায় অস্থিরতা তৈরি করতে চায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও দাবি করা হয়, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের নীরব অবস্থান প্রমাণ করে যে প্রশাসনের ভেতর এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। এক সময় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হতো, অথচ এখন ভয়াবহ অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী নেতারা জামাই আদরে আদালতে হাজির হচ্ছেন।” বিএনপির অভিযোগ, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হচ্ছে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল, কোথাও কোথাও বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি পোড়ানোসহ শিল্পী, কুশলী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের মানিকগঞ্জের বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভষ্মিভূত হয়ে যায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশে যে মাফিয়া অর্থনীতি গড়ে উঠেছে, তার নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। যেসব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ফ্যাসিবাদকে অর্থায়ন করেছে, তারা আজও বহাল তবিয়তে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”
রিজভী অভিযোগ করেন, “২৮ লাখ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ফাঁস হওয়া দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা আজও অদৃশ্য শক্তির ছায়ায় রক্ষা পাচ্ছে। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও বড় অঙ্কের বিনিময়ে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের রক্ষা করে চলেছেন।” তিনি বলেন, “এর ফলেই দেশের হাট-বাজার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এখন জীবনযাপন দুরূহ হয়ে উঠেছে।” বিএনপি এই পরিস্থিতিকে গণতন্ত্রের জন্য চরম হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তির শেষে রিজভী সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমরা গণমাধ্যমে আশা করি, তারা এই ভয়াবহ বাস্তবতাকে তুলে ধরবে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।”