অনলাইন ডেস্ক।।
কালের কন্ঠস্বর || ১৮ মে ২০২৫
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকার অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠাতে কড়াকড়ি অবস্থান নিয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি আওয়ামী লীগপন্থী আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর না পড়লেও অদূর ভবিষ্যতে তাদের বিপাকে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র বলছে, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচলসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রায় এক লাখ ৪৩ হাজার নেতা-কর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘ নয় মাস ধরে এদের অনেকে পরিবারসহ বসবাস করছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় এসব ব্যক্তি ভারতে প্রবেশ করলেও, ভারত সরকারের কঠোর নীতির কারণে তারা এখন উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন।
ভারতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগামী আগস্ট থেকে অভিযান জোরদার করতে যাচ্ছে। সেই সময় পর্যন্ত কিছুটা সময় দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ, যাতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারেন। ইতোমধ্যে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ভারত ত্যাগ করে আমেরিকা ও ইউরোপমুখী হয়েছেন।
ভারতে অবস্থানকারী একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় তারা অন্যত্র পাড়ি জমাতে চাইছেন। অন্যদিকে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অবৈধভাবে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের বা তো দেশে ফিরতে হবে, না হয় তৃতীয় কোনো দেশে চলে যেতে হবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। ভারতের চাপ এবং বৈশ্বিক অবস্থান বিবেচনায় রেখে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের দেশে ফেরার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে এই নির্দেশনা নেতাদের মাঝে দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেন, “পুশব্যাক একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্পর্শকাতর প্রক্রিয়া। ধাক্কাধাক্কি করে কাউকে বের করে দেওয়ার চেয়ে নিয়ম মেনে প্রত্যাবাসন হওয়া উচিত। বিশেষ করে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আরও মানবিকতা প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, গত ১০ মে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারাধীন থাকা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। ফলে দলটির পলাতক নেতাকর্মীদের দেশে ফেরা ও রাজনীতিতে পুনঃসম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত ক্ষীণ।
সূত্র: আমাদের সময়.কম