অনলাইন ডেস্ক।।
কালের কণ্ঠস্বর প্রতিবেদন || চট্টগ্রাম || মে ২১, ২০২৫
ভারতের হঠাৎ বাংলাদেশের জন্য এয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পর, বিকল্প রপ্তানি রুট নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে তৈরি পোশাক পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মে মাসের শেষ দিকে শুরু হতে যাচ্ছে এই এয়ার শিপমেন্ট কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ২৭০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার দুটি নতুন ওয়ারহাউস প্রস্তুত রয়েছে। এর পাশাপাশি ১৭০ ও ১২০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পুরনো ওয়ারহাউস খালি করে তাদের সংস্কার ও নিরাপত্তা পরীক্ষা চলছে। যাত্রীবাহী বিমানে সীমিত পণ্য পরিবহন চললেও এবার সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইত্তেহাদ ও এমিরেটস এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি চললেও, ২০২১ সালে করোনার ধাক্কায় তা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করায় দেশের রপ্তানিকারকরা চাপে পড়েন। তবে নতুন এই উদ্যোগে ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তির আভাস দেখা দিয়েছে।
একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলেন, “চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু হলে রপ্তানির খরচ ও সময়—দুই-ই বাঁচবে। আগে যেমন পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে একদিন লাগত, এবার এয়ার কার্গো থেকেও সেই সুবিধা পাওয়া যাবে।”
বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী ইপিজেড, কোরিয়ান ইপিজেডসহ বিভিন্ন স্থানে ৪০০-র বেশি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। এতদিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর এয়ার শিপমেন্টে পিছিয়ে থাকলেও, এবার এই সুবিধা চালু হলে এসব কারখানার রপ্তানি কার্যক্রমে গতি আসবে।
ইউরোপের বাজারে পণ্য পাঠাতে প্রয়োজনীয় EU অনুমোদিত R3 সিকিউরিটি প্রোটোকল বাস্তবায়নের কাজ চলছে, যা সম্পন্ন হতে ৩ থেকে ৪ মাস লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে কাস্টমস বিভাগ অতিরিক্ত জনবল ও পরিদর্শক দল সরবরাহে সম্মত হয়েছে। কার্গো রিসিভার সম্প্রসারণ, নতুন শেড নির্মাণ, কোল্ড স্টোরেজ সংস্কার ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম স্থাপনের কাজও চলছে পুরোদমে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই উদ্যোগ সফল হলে চট্টগ্রামের রপ্তানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারবেন এবং দেশও উপকৃত হবে নতুন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগে।