আজ (৩০ মার্চ) ফিলিস্তিনে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে এই আনন্দের দিনেও গাজায় নেই কোনো উৎসবের আমেজ। বরং, ঈদের দিনেও অবরুদ্ধ গাজার নিরীহ বাসিন্দাদের ওপর বয়ে গেছে দখলদার ইসরাইলের নৃশংস হামলা।
শনিবার (২৯ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মোহাম্মদ হুসেন ঘোষণা দেন যে, রোববার ফিলিস্তিনে ঈদুল ফিতর পালিত হবে। এই ঘোষণার পর গাজার মুসলমানরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ঈদের নামাজ আদায় করেন। তবে, সেই নামাজের মাঝেও শোনা গেছে গুলির শব্দ। ফিলিস্তিনি তথ্য কেন্দ্র একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়, ঈদের নামাজ চলাকালীন ইসরাইলি বাহিনীর গোলাগুলির আওয়াজে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রক্তাক্ত ঈদ: ঈদের দিনেও গাজায় হত্যা অভিযান
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের সকালেই ইসরাইলি বাহিনী নতুন করে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে পাঁচজন শিশু রয়েছে। ঈদের ঠিক আগের দিন শনিবারও ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ১৭ জন, যার মধ্যে একজন শিশুও ছিল। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে ইসরাইল আকস্মিকভাবে গাজার বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৯২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।
গাজার মানবিক সংকট
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অব্যাহত হামলায় ৫০,২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। তবুও, বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন মুসলিম দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তবে, পশ্চিমা বিশ্ব এখনো কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও ইসরাইল তা উপেক্ষা করে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গাজার মানুষের দুর্দশা
অবরুদ্ধ গাজার জনগণ এখন খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা সংকটে ভুগছে। ঈদের দিনেও শিশুরা খাবারের জন্য হাহাকার করছে, ঘরহারা মানুষ আশ্রয়ের সন্ধানে দিন কাটাচ্ছে। ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে— এই নিপীড়নের শেষ কোথায়?
যখন বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো ঈদ উদযাপনে মেতে আছে, তখন গাজার মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। রক্ত, ধ্বংসস্তূপ আর বেদনায় মোড়ানো এই ঈদ যেন ফিলিস্তিনিদের জন্য আরেকটি দুঃস্বপ্ন।
(কালের কন্ঠস্বর বিশেষ প্রতিবেদন)
ফজর | ০৪:০৭ ভোর | |
---|---|---|
যোহর | ১১:৫৭ দুপুর | |
আছর | ০৩:২৩ বিকাল | |
🌇 | মাগরিব | ০৬:২৭ সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:৪৮ রাত | |
জুম্মা | ১১:৫৭ দুপুর |