সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত একটি হিন্দি ছবির গানকে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে। এই গানের দৃশ্যায়ন ও ভাষার ব্যবহারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপব্যাখ্যা এবং বিকৃতি ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা।
গানটি ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত
ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সম্প্রচারিত ছবিটির একটি গান মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই এটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দর্শকরা অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের মতো সংবেদনশীল একটি বিষয়কে ভুলভাবে চিত্রিত করা হয়েছে এবং এতে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়নি। গানের ভাষা ও দৃশ্যায়ন নিয়ে আপত্তি তুলেছেন অনেক বিশিষ্ট শিল্পী, ইতিহাসবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এই গানটি ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। দেশের বিশিষ্ট শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা এ বিষয়টিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অবমাননা হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও অভিনয় শিল্পী সংঘের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। একাধিক সংগঠন এই গানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গেও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সংবেদনশীলতা রয়েছে এবং অনেক বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফলে পশ্চিমবঙ্গের অনেক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও এই গানের উপস্থাপনাকে অপমানজনক বলে মন্তব্য করেছেন। কলকাতার চলচ্চিত্র সমালোচকরা মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবময় অধ্যায়কে বিকৃতভাবে তুলে ধরা ইতিহাসের প্রতি অবিচার।
নির্মাতাদের প্রতিক্রিয়া
বিতর্কের মুখে ছবির নির্মাতারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে তাঁরা গানটির কিছু অংশ সংশোধনের ব্যাপারে ভাবছেন।
সম্মিলিত দাবিসমূহ
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ের চিত্রায়নে গবেষণার গুরুত্ব এবং যথাযথ সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। অনেকে গানটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের বিরুদ্ধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন।
এই বিতর্কের ফলে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিষয়বস্তুর উপস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। ইতিহাসকে যথাযথভাবে তুলে ধরা ও সংবেদনশীল বিষয়গুলোকে সম্মানজনকভাবে উপস্থাপনের দায়িত্ব নির্মাতাদের নিতে হবে—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
কালের কন্ঠস্বর
ফজর | ০৪:০৭ ভোর | |
---|---|---|
যোহর | ১১:৫৭ দুপুর | |
আছর | ০৩:২৩ বিকাল | |
🌇 | মাগরিব | ০৬:২৭ সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:৪৮ রাত | |
জুম্মা | ১১:৫৭ দুপুর |